বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) প্রায় ১০ হাজার শিক্ষার্থীর জন্য রয়েছে একটি মাত্র খেলার মাঠ। সেখানে অল্প বৃষ্টি হলেই খেলার মাঠ ও ক্যাম্পাসে রাস্তার বিভিন্ন অংশে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। মনে হয় ধান চাষ করার জন্য উপযোগী করে তোলা হয়েছে। যদিও এখন একাধারে বৃষ্টি হচ্ছে। বাস্তবতা, অল্প বৃষ্টি হলেই কাঁদা ও মাঠ চাষাবাদ করা হয়েছে। কোন ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় এমন করুণ দৃশ্যের কারণ। একযুগ পার হলো মাঠের দিকে নজর নেই প্রশাসনের। শিক্ষার্থীরা জানান, মাঠে এখন খেলাধুলা না করে ধান চাষের উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, খেলার মাঠের অধিকাংশ জায়গা উঁচু-নিচু। অতিরিক্ত ঘাস হওয়ায় ও পানি নিষ্কাশনের যথাযথ ব্যবস্থা না থাকায় অল্প বৃষ্টিতেই পানি জমে গেছে। বর্ষাকালের পুরো সময়েই মাঠটিতে পানি জমে থাকায় খেলার অনুপোযোগী হয়ে পড়ে মাঠটি। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় দশ হাজার শিক্ষার্থীর জন্য একটাই খেলার মাঠ হওয়ায় দ্রুতই সমস্যা সমাধানের দাবি জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
প্রায় সারা বছরই মাঠটিতে ক্রিকেট, ফুটবল ও ভলিবলের মতো খেলা থাকে। এ মাঠেই আয়োজন করা হয় আন্তঃবিভাগ সহ বিভিন্ন টুর্নামেন্ট। কিন্তু মাঠের পরিবেশ খেলার উপযোগী না হওয়ায় নিয়মিত খেলাধূলায় অংশগ্রহণ করতে পারছে না শিক্ষার্থীরা। যদি মাঠ সংস্কার করা হয় এবং পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা থাকে তাহলে মাঠে পানি জমে থাকবেনা। ফলে,কাঁদা হওয়ার কোনো সম্ভবনা থাকে না।
বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী মোঃ ফাহিম বলেন, আমাদের কেন্দ্রীয় মাঠে পানি নিষ্কাশনের অভাব। ফলশ্রুতিতে, কাঁদা হয়ে যায় পুরো মাঠ।একটিমাত্র খেলার মাঠ হওয়ায় সকল বিভাগের শিক্ষার্থীরাদের খেলাধূলা এই মাঠেই করতে হয়। মাঠে প্রচুর গর্ত থাকার কারনে শিক্ষার্থীরা যে কোন সময় ইঞ্জুরিতে পরতে পারে। ইতোমধ্যে অনেকেই ছোট বড় বিভিন্ন ধরনের ইঞ্জুরিতে পড়েছে। মাঠে কোনো পানি নিষ্কাশনের ব্যাবস্থা না থাকায় সামান্য বৃষ্টিতেই মাঠ কর্দমাক্ত হয়। খেলাধুলার জন্য একদমই অনুপযুক্ত হয়ে পড়ে। শুধুমাত্র আন্ত:বিভাগ টুর্নামেন্টের সময় ছাড়া বছরের আর কোনো সময়েই মাঠের সংস্কারের জন্য কোনো উদ্যোগ নেয়া হয় না।
এসব নিয়ে এরআগেও সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের সাথে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও কোনো লাভ হয়নি। আমাদের খেলার মাঠ সংস্কার এবং উপযুক্ত পানি নিষ্কাশনের ব্যাবস্থা নেয়া এখন সময়ের দাবি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক শিক্ষার্থী জানান, একটা বিশ্ববিদ্যালয়ের খেলার মাঠ এত খারাপ যে নিজেদের প্রতি বিরক্ত লাগে। এই মাঠে এখন খেলা তো দুরের কথা এখন ধান চাষ করায় ভালো। প্রধানমন্ত্রী খেলাধুলার প্রতি মনোনিবেশ দিতে বলেছেন অথচ আমাদের মাঠই তো অনুপযোগী হয়ে থাকে।
মাঠ সংস্কার এর বিষয়ে শারীরিক শিক্ষা দপ্তরে পরিচালক মোহাম্মদ রাকিবুল হাসান এর কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি জানান, এই বৃষ্টির মৌসুম শেষ হলেই আমরা মাঠ সংস্কার এর কাজ শুরু করে দিবো।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-প্রধান প্রকৌশলী মোঃ মুরশীদ আবেদীন বলেন, মাঠ সংস্কারের কাজ শারীরিক শিক্ষা দপ্তেরের। তবে তারা মাঠ সংস্কারের জন্য কোন উদ্যোগ নিলে আমরা আমাদের সর্বোচ্চ দিয়ে সহায়তা করবো।