ঢাকা ০৯:১৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বরগুনার কিশোরীরা মার্শাল আর্ট শিখছে ৭০০ কিশোরী

  • স্টাফ রিপোর্টার
  • আপডেট সময় : ১২:০২:৪৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৩
  • ১৩৫ খবরটি দেখা হয়েছে

আত্মরক্ষায় কৌশল আয়ত্ব করে আত্মবিশ্বাসী হতে বরগুনার কিশোরীরা মার্শাল আর্ট শিখছে। মার্শাল আর্ট প্রশিক্ষণের পাশাপাশি বাল্যবিয়ে প্রতিরোধ, যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য সম্পর্কেও সচেতন হচ্ছে তারা। এ পর্যন্ত জেলার ৭০০ কিশোরী মার্শাল আর্ট প্রশিক্ষণের আওতায় এসেছে বলে সরকারি ও বেসরকারি সংস্থাগুলো জানিয়েছে।
বরগুনা সদর উপজেলার ঢলুয়া ইউনিয়নের পোটকাখালী আবাসন প্রকল্পের মাঠে মার্শাল আর্ট ‘কারাতে’র বিভিন্ন শারীরিক কসরত শিখছে ৬ষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেণি পড়–য়া কিশোরী শিক্ষার্থীরা। এরা উচ্চবিত্ত পরিবারের সন্তান না হলেও আত্মরক্ষার কৌশল এদেরকে গড়ে তুলছে আত্মবিশ^াসী প্রজন্ম হিসেবে। 
নরওয়েজিয়ান এজেন্সি ফর ডেভেলপমেন্ট কো-অপারেশন-নোরাড’র সহায়তায় প্লান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ ও সহযোগী সংস্থা সাউথ এশিয়া পার্টনারশীপ বাংলাদেশ’র একটি প্রকল্পের মাধ্যমে বরগুনা সদর উপজেলার ১০ টি ইউনিয়নে ১০ টি কিশোর-কিশোরী ক্লাবের ৪০০ কিশোরী সদস্য আত্মরক্ষার কৌশল শিখে আত্মবিশ্বাসী হয়ে গড়ে উঠছে। আত্মরক্ষার কৌশল শিখে নিজেদের ব্যাক্তিগত সুরক্ষার পাশাপাশি বাল্যবিয়ে রোধ ও যৌন প্রজনন স্বাস্থ্য বিষয়ে সচেতন হচ্ছে তারা। সেই সাথে অন্যের সুরক্ষায়ও এগিয়ে আসার সাহস তৈরি হয়েছে তাদের।
আমতলী উপজেলায় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা এনএসএস তাদের এডুকো প্রকল্পের মাধ্যমে প্রতিবছর ৫০জন করে দুইটি কিশোরী-টিমকে কারাতে প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। এনএসএস’র নির্বাহি পরিচালক জানিয়েছেন, কারাতে প্রশিক্ষণের পর আত্ম-কেন্দ্রিক কিশোরীরাও আত্ম-প্রত্যয়ী হয়েছে।
মার্শাল আর্ট প্রশিক্ষক বশির উদ্দিন নিমু জানান- মুজিববর্ষ উপলক্ষে বরগুনা জেলা প্রশাসন জেলার ১০০ কিশোরীকে ইতোমধ্যে কারাতে প্রশিক্ষণ দিয়েছে। তিনি জানান, প্রতিটি বিদ্যালয়ের  প্রত্যকটি মেয়েরই কারাতে শেখা প্রয়োজন। এতে যেমন তারা আত্মরক্ষা করতে পারবে, তেমনি তাদের মানসিক-শারীরিক সুস্থতা ও বিকাশ ঘটবে।
কারাতে প্রশিক্ষণ পাওয়া ফাতিমা তুজ জোহরা মম জানায়, শুধু আত্মরক্ষা নয়, অন্য মানুষের সাথে কোন অন্যায় হলে তার প্রতিবাদ ও প্রতিরোধে এগিয়ে যাওয়ার সাহস আমাদের হয়েছে। এ জাতীয় প্রশিক্ষণ বাংলাদেশের সব জেলাতেই হওয়া প্রয়োজন।
কন্যা সন্তানরা আত্মরক্ষার কৌশল শেখায় স্বজন ও অভিবাবকদের মধ্যেও মিলছে স্বস্তি। আলাপকালে অভিভাবকেরা জানান, পথে ঘাটে, বাসে, গণপরিবহনে, জনবহুল জায়গা এমনকি বাসাতেও অপরিচিত কিংবা আপনজনের দ্বারা নিগ্রহের শিকার হয় মেয়েরা। তাই আত্মরক্ষার কৌশল (মার্শাল আর্ট) শিখে আত্মবিশ্বাসী এক নতুন প্রজন্ম তৈরি হচ্ছে বরগুনায়। 
বরগুনার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ফয়সাল আহমেদ জানান, আত্মরক্ষার কৌশল কিশোরীদের করেছে আত্মনির্ভরশীল, আগামী প্রজন্ম গড়ে উঠছে আত্মবিশ্বাসী হিসেবে। মার্শাল আর্ট কিশোরীদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। বিস্তৃত পরিসরে মার্শাল আর্ট প্রশিক্ষণের জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোর সাথে আলোচনা করে সরকারিভাবে একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র বরগুনায় স্থাপনের ব্যাপারে উদ্যোগ নেওয়া হবে।

খুলনার দাকোপে বাধ ভেঙে পানি ঢুকছে লোকলয়ে

বরগুনার কিশোরীরা মার্শাল আর্ট শিখছে ৭০০ কিশোরী

আপডেট সময় : ১২:০২:৪৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৩

আত্মরক্ষায় কৌশল আয়ত্ব করে আত্মবিশ্বাসী হতে বরগুনার কিশোরীরা মার্শাল আর্ট শিখছে। মার্শাল আর্ট প্রশিক্ষণের পাশাপাশি বাল্যবিয়ে প্রতিরোধ, যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য সম্পর্কেও সচেতন হচ্ছে তারা। এ পর্যন্ত জেলার ৭০০ কিশোরী মার্শাল আর্ট প্রশিক্ষণের আওতায় এসেছে বলে সরকারি ও বেসরকারি সংস্থাগুলো জানিয়েছে।
বরগুনা সদর উপজেলার ঢলুয়া ইউনিয়নের পোটকাখালী আবাসন প্রকল্পের মাঠে মার্শাল আর্ট ‘কারাতে’র বিভিন্ন শারীরিক কসরত শিখছে ৬ষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেণি পড়–য়া কিশোরী শিক্ষার্থীরা। এরা উচ্চবিত্ত পরিবারের সন্তান না হলেও আত্মরক্ষার কৌশল এদেরকে গড়ে তুলছে আত্মবিশ^াসী প্রজন্ম হিসেবে। 
নরওয়েজিয়ান এজেন্সি ফর ডেভেলপমেন্ট কো-অপারেশন-নোরাড’র সহায়তায় প্লান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ ও সহযোগী সংস্থা সাউথ এশিয়া পার্টনারশীপ বাংলাদেশ’র একটি প্রকল্পের মাধ্যমে বরগুনা সদর উপজেলার ১০ টি ইউনিয়নে ১০ টি কিশোর-কিশোরী ক্লাবের ৪০০ কিশোরী সদস্য আত্মরক্ষার কৌশল শিখে আত্মবিশ্বাসী হয়ে গড়ে উঠছে। আত্মরক্ষার কৌশল শিখে নিজেদের ব্যাক্তিগত সুরক্ষার পাশাপাশি বাল্যবিয়ে রোধ ও যৌন প্রজনন স্বাস্থ্য বিষয়ে সচেতন হচ্ছে তারা। সেই সাথে অন্যের সুরক্ষায়ও এগিয়ে আসার সাহস তৈরি হয়েছে তাদের।
আমতলী উপজেলায় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা এনএসএস তাদের এডুকো প্রকল্পের মাধ্যমে প্রতিবছর ৫০জন করে দুইটি কিশোরী-টিমকে কারাতে প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। এনএসএস’র নির্বাহি পরিচালক জানিয়েছেন, কারাতে প্রশিক্ষণের পর আত্ম-কেন্দ্রিক কিশোরীরাও আত্ম-প্রত্যয়ী হয়েছে।
মার্শাল আর্ট প্রশিক্ষক বশির উদ্দিন নিমু জানান- মুজিববর্ষ উপলক্ষে বরগুনা জেলা প্রশাসন জেলার ১০০ কিশোরীকে ইতোমধ্যে কারাতে প্রশিক্ষণ দিয়েছে। তিনি জানান, প্রতিটি বিদ্যালয়ের  প্রত্যকটি মেয়েরই কারাতে শেখা প্রয়োজন। এতে যেমন তারা আত্মরক্ষা করতে পারবে, তেমনি তাদের মানসিক-শারীরিক সুস্থতা ও বিকাশ ঘটবে।
কারাতে প্রশিক্ষণ পাওয়া ফাতিমা তুজ জোহরা মম জানায়, শুধু আত্মরক্ষা নয়, অন্য মানুষের সাথে কোন অন্যায় হলে তার প্রতিবাদ ও প্রতিরোধে এগিয়ে যাওয়ার সাহস আমাদের হয়েছে। এ জাতীয় প্রশিক্ষণ বাংলাদেশের সব জেলাতেই হওয়া প্রয়োজন।
কন্যা সন্তানরা আত্মরক্ষার কৌশল শেখায় স্বজন ও অভিবাবকদের মধ্যেও মিলছে স্বস্তি। আলাপকালে অভিভাবকেরা জানান, পথে ঘাটে, বাসে, গণপরিবহনে, জনবহুল জায়গা এমনকি বাসাতেও অপরিচিত কিংবা আপনজনের দ্বারা নিগ্রহের শিকার হয় মেয়েরা। তাই আত্মরক্ষার কৌশল (মার্শাল আর্ট) শিখে আত্মবিশ্বাসী এক নতুন প্রজন্ম তৈরি হচ্ছে বরগুনায়। 
বরগুনার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ফয়সাল আহমেদ জানান, আত্মরক্ষার কৌশল কিশোরীদের করেছে আত্মনির্ভরশীল, আগামী প্রজন্ম গড়ে উঠছে আত্মবিশ্বাসী হিসেবে। মার্শাল আর্ট কিশোরীদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। বিস্তৃত পরিসরে মার্শাল আর্ট প্রশিক্ষণের জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোর সাথে আলোচনা করে সরকারিভাবে একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র বরগুনায় স্থাপনের ব্যাপারে উদ্যোগ নেওয়া হবে।