ঢাকা ০২:২৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় তামিমের

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • আপডেট সময় : ০৩:১৮:০১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৬ জুলাই ২০২৩
  • ৭৫ খবরটি দেখা হয়েছে

গুঞ্জনটা জোরালো হচ্ছিল গতকাল রাত থেকেই। হুট করেই গতকাল রাতে চট্টগ্রামে বাংলাদেশ-আফগানিস্তান সিরিজ কাভার করতে আসা সাংবাদিকদের নিয়ে এক বিশেষ সংবাদ সম্মেলন করার কথা জানান তামিম ইকবাল। তখন থেকেই তামিমের অবসর নিয়ে যত জল্পনাকল্পনার শুরু।

শেষ পর্যন্ত তা-ই হলো। আজ চট্টগ্রামের একটি হোটেলে সংবাদ সম্মেলন করে তামিম বিদায় জানিয়ে দিলেন সব ধরনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে। গত বছর ১৬ জুলাই আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি থেকে অবসর নিয়েছেন ৩৪ বছর বয়সী তামিম। এবার ওয়ানডে ও টেস্ট থেকেও অবসরের ঘোষণা দিলেন বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসের সর্বকালের সেরা ওপেনার।

সংবাদ সম্মেলনে অশ্রুসজল চোখে তামিম বলেছেন, ‘আফগানিস্তানের বিপক্ষে গতকালের ম্যাচটিই আমার ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ। এই মুহূর্ত থেকে আমি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানাচ্ছি। সিদ্ধান্তটি হুট করে নেওয়া নয়। অনেক দিন ধরেই আমি এটা নিয়ে ভাবছি। পরিবারের সঙ্গে কথাও বলেছি এটা নিয়ে।’

তামিম এই কথা বলার সময় পিনপতন নীরবতা নেমে এসেছিল সংবাদ সম্মেলনে। শুধু ক্যামেরার শাটার ক্লিকের আওয়াজ শোনা গেছে আর তামিমের ডুকরে ডুকরে কেঁদে ওঠার শব্দ।

ধরে আসা গলাতেই বাংলাদেশের সর্বকালের সেরা এই ওপেনার বলেছেন, ‘আসলে আমার খুব বেশি কিছু বলার নেই। আমি একটা জিনিসই বলতে চাই, সেটি হলো, আমি আমার সর্বোচ্চটা দিয়ে চেষ্টা করেছি ভালো খেলার। আমি আসলেই নিজের সর্বোচ্চটা দিয়ে চেষ্টা করেছি। আমি কতটা ভালো খেলোয়াড় ছিলাম, আদৌ ভালো ছিলাম কি না, আমি জানি না। তবে আমি সর্বোচ্চটা দিয়ে চেষ্টা করেছি। আমি যখনই মাঠে নেমেছি, আমি আমার শতভাগ দিয়েছি।’

তামিমের মুখভঙ্গি, চোখেমুখে প্রকাশ পাওয়া আবেগ দেখেই বোঝা যাচ্ছিল অনেক কিছুই বলতে চান কিন্তু পারছেন না। কথায় সেই শোকতাপের সুর তুলেই বললেন, ‘আমি অনেক কিছু বলতে চাই আসলে, কিন্তু আপনারা দেখছেন, আমি কথাই বলতে পারছি না। আমি আশা করি আপনারা পরিস্থিতিটা বোঝার চেষ্টা করবেন। কথা বলার জন্য এটা খুব আদর্শ পরিস্থিতি নয়। বিশেষ করে এত বছর পর খেলার পর এই খেলাটাকে বিদায় বলাটা খুব সহজ কিছু নয়।’

ওয়ানডে ক্রিকেট দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয় তামিমের। ২০০৭ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি কেনিয়ার বিপক্ষে দেশের হয়ে প্রথম ম্যাচ খেলেছিলেন।

আফগানিস্তানের বিপক্ষে নিজের ঘরের মাঠে এই সংস্করণেই তাঁর শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেললেন তামিম। ২৪১ ম্যাচের ওয়ানডে ক্যারিয়ারে ৩৬.৬২ গড়ে ৮৩১৩ রান করেছেন, সেঞ্চুরি ১৪টি, ফিফটি ৫৬টি।

টেস্টে ৭০ ম্যাচে ৩৮.৮৯ গড়ে ৫১৩৪ রান করেছেন তামিম। সেঞ্চুরি ১০টি ও ফিফটি ৩১টি। এই সংস্করণে বাংলাদেশের হয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান ও সেঞ্চুরি করেছেন তামিম।

টি–টোয়েন্টিতে ৭৪ ম্যাচে ১৭০১ রান করেছেন তামিম। এই সংস্করণে দেশের হয়ে শুধু তামিমই সেঞ্চুরি করেছেন। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ২৫ সেঞ্চুরি করা তামিম তিন সংস্করণ মিলিয়ে ১৫ হাজারের বেশি রান করেছেন। দেশের আর কোনো ক্রিকেটার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এত রান করতে পারেননি।

ট্যাগ :

আজ সারাদেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় তামিমের

আপডেট সময় : ০৩:১৮:০১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৬ জুলাই ২০২৩

গুঞ্জনটা জোরালো হচ্ছিল গতকাল রাত থেকেই। হুট করেই গতকাল রাতে চট্টগ্রামে বাংলাদেশ-আফগানিস্তান সিরিজ কাভার করতে আসা সাংবাদিকদের নিয়ে এক বিশেষ সংবাদ সম্মেলন করার কথা জানান তামিম ইকবাল। তখন থেকেই তামিমের অবসর নিয়ে যত জল্পনাকল্পনার শুরু।

শেষ পর্যন্ত তা-ই হলো। আজ চট্টগ্রামের একটি হোটেলে সংবাদ সম্মেলন করে তামিম বিদায় জানিয়ে দিলেন সব ধরনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে। গত বছর ১৬ জুলাই আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি থেকে অবসর নিয়েছেন ৩৪ বছর বয়সী তামিম। এবার ওয়ানডে ও টেস্ট থেকেও অবসরের ঘোষণা দিলেন বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসের সর্বকালের সেরা ওপেনার।

সংবাদ সম্মেলনে অশ্রুসজল চোখে তামিম বলেছেন, ‘আফগানিস্তানের বিপক্ষে গতকালের ম্যাচটিই আমার ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ। এই মুহূর্ত থেকে আমি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানাচ্ছি। সিদ্ধান্তটি হুট করে নেওয়া নয়। অনেক দিন ধরেই আমি এটা নিয়ে ভাবছি। পরিবারের সঙ্গে কথাও বলেছি এটা নিয়ে।’

তামিম এই কথা বলার সময় পিনপতন নীরবতা নেমে এসেছিল সংবাদ সম্মেলনে। শুধু ক্যামেরার শাটার ক্লিকের আওয়াজ শোনা গেছে আর তামিমের ডুকরে ডুকরে কেঁদে ওঠার শব্দ।

ধরে আসা গলাতেই বাংলাদেশের সর্বকালের সেরা এই ওপেনার বলেছেন, ‘আসলে আমার খুব বেশি কিছু বলার নেই। আমি একটা জিনিসই বলতে চাই, সেটি হলো, আমি আমার সর্বোচ্চটা দিয়ে চেষ্টা করেছি ভালো খেলার। আমি আসলেই নিজের সর্বোচ্চটা দিয়ে চেষ্টা করেছি। আমি কতটা ভালো খেলোয়াড় ছিলাম, আদৌ ভালো ছিলাম কি না, আমি জানি না। তবে আমি সর্বোচ্চটা দিয়ে চেষ্টা করেছি। আমি যখনই মাঠে নেমেছি, আমি আমার শতভাগ দিয়েছি।’

তামিমের মুখভঙ্গি, চোখেমুখে প্রকাশ পাওয়া আবেগ দেখেই বোঝা যাচ্ছিল অনেক কিছুই বলতে চান কিন্তু পারছেন না। কথায় সেই শোকতাপের সুর তুলেই বললেন, ‘আমি অনেক কিছু বলতে চাই আসলে, কিন্তু আপনারা দেখছেন, আমি কথাই বলতে পারছি না। আমি আশা করি আপনারা পরিস্থিতিটা বোঝার চেষ্টা করবেন। কথা বলার জন্য এটা খুব আদর্শ পরিস্থিতি নয়। বিশেষ করে এত বছর পর খেলার পর এই খেলাটাকে বিদায় বলাটা খুব সহজ কিছু নয়।’

ওয়ানডে ক্রিকেট দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয় তামিমের। ২০০৭ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি কেনিয়ার বিপক্ষে দেশের হয়ে প্রথম ম্যাচ খেলেছিলেন।

আফগানিস্তানের বিপক্ষে নিজের ঘরের মাঠে এই সংস্করণেই তাঁর শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেললেন তামিম। ২৪১ ম্যাচের ওয়ানডে ক্যারিয়ারে ৩৬.৬২ গড়ে ৮৩১৩ রান করেছেন, সেঞ্চুরি ১৪টি, ফিফটি ৫৬টি।

টেস্টে ৭০ ম্যাচে ৩৮.৮৯ গড়ে ৫১৩৪ রান করেছেন তামিম। সেঞ্চুরি ১০টি ও ফিফটি ৩১টি। এই সংস্করণে বাংলাদেশের হয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান ও সেঞ্চুরি করেছেন তামিম।

টি–টোয়েন্টিতে ৭৪ ম্যাচে ১৭০১ রান করেছেন তামিম। এই সংস্করণে দেশের হয়ে শুধু তামিমই সেঞ্চুরি করেছেন। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ২৫ সেঞ্চুরি করা তামিম তিন সংস্করণ মিলিয়ে ১৫ হাজারের বেশি রান করেছেন। দেশের আর কোনো ক্রিকেটার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এত রান করতে পারেননি।